সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪২ অপরাহ্ন
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি :
পাইকগাছায় জায়গা জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী প্রতিপক্ষরা রহিমা বেগম নামে এক গৃহবধূর বসতবাড়ীর যাতায়াতের পথ ঘেরাবেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ এখনো পর্যন্ত ঘেরা অপসারণ করতে পারেনি। ফলে গত ৩ দিন বসতবাড়ীর মধ্যেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে গৃহবধূ ও তার পরিবার। অমানবিক এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের রামনাথপুর গ্রামে।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানাগেছে, রামনাথপুর গ্রামের গফুর গাজীর স্ত্রী রহিমা বেগম ২২ শতক জমির উপর বসতবাড়ী নির্মাণ করে ১৯৮৪ সাল থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। ২০১১ সালের দিকে প্রতিবেশী প্রতিপক্ষ মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে শেখ আব্দুর রহমান, আব্দুর রহিম, বাবলু, ইব্রাহিম, ইদ্রিস ও ইউনুছরা কয়েক ভাই মিলে রহিমা বেগমদের যাতায়াতের পথে কাটাতার দিয়ে ঘিরে দেয়। এ ঘটনায় রহিমার মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে ১৭/১০/২০১২ ইং তারিখ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ১১৫/১২ নং মিসকেস করে। পরে বিষয়টি উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার উপর অর্পন করা হয়। উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা দু’পক্ষকে নিয়ে শালিসী বৈঠক ও আপোস মিমাংসার মাধ্যমে রাবেয়া বেগমদের যাতায়াতের পথ বহাল রেখে ২/২/২০১৩ ইং তারিখে বিষয়টি নিরসন করেন। গত কয়েক বছর রহিমা বেগম ও তার পরিবার শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস ও যাতায়াত করে আসছিল। পথিমধ্যে গত ২৪ মে শুক্রবার প্রতিপক্ষ রহমান গংরা রহিমাদের বসতবাড়ীর সামনে ঘেরাবেড়া দিয়ে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করারপর এসআই অখিল রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রহমান গংদের ঘেরা অপসারণ করে নেওয়ার নির্দেশ দিলেও পুলিশের কোন নির্দেশনা মানছেন না তারা। ফলে গত ৩ দিন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসতবাড়ীর মধ্যেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে রহিমার পরিবার। এ ব্যাপারে রহিমা বেগম জানান, গত ৩৫ বছর নালিশী পথ দিয়ে যাতায়াত করছি। মূলত আমার বসতবাড়ীর সামনে দিয়ে দুটি পথ রয়েছে। ৮ ফুট আয়তনের যে পথটি রয়েছে সেটি প্রতিপক্ষ রহমান গংদের এবং এপথটি তারাই ব্যবহার করে থাকে। তাদের এই পথ ও আমার বসতবাড়ীর সামনে দিয়ে ৪ ফুট আয়তনের সরু একটি পথ রয়েছে। যেটি আমাদের এবং আমরাই যাতায়াত করে থাকি। প্রতিপক্ষরা পেশি শক্তি বলে গত শুক্রবার আমার বসতবাড়ীর সামনে ঘেরা দিয়ে আমাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমার ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া থেকে শুরু করে বাইরের সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা অনেকটাই গৃহবন্দিরমত জীবন যাপন করছি। প্রতিবেশী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ স্বপন মন্ডল জানান, আমি নিজে থেকেই রহিমাদের বসবাসের জন্য ২২ শতক জমি কিনে দিয়েছিলাম। যার ফলে যাতায়াতের পথ নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হলে আমরাই ৪ ফুট মত জায়গা তাদের যাতায়াতের জন্য ছেড়ে দেই। ঘেরা দিয়ে উক্ত যাতায়াতের পথটি বন্ধ করে দিয়ে রহমান গংরা অমানবিক কাজ করেছে। আমরা প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীরা চাই থানা পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে যত দ্রুত সম্ভব অবরুদ্ধ থেকে রহিমা বেগম ও তার পরিবার মুক্ত হোক।
Leave a Reply