সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি :
পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন এক স্কুল ছাত্র চিকিৎসকের অবহেলার কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল অভ্যান্তরে মৃতের পরিবারের লোকজন ও স্বজনরা কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে উত্তেজিত হয়ে উঠলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুলিশ মোতায়ন করা হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন ইউএনও জুলিয়া সুকায়না, ওসি এমদাদুল হক শেখ ও ওসি (তদন্ত) রহমত আলী।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানাগেছে, উপজেলার রাড়–লী ইউনিয়নের আরাজী ভবানীপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের ৭ম শ্রেণি পড়–য়া ছেলে মোস্তফা শাহারিয়ার শুভ (১৩) জ্বর ও বমির কারণে অসুস্থ হলে পরিবারের লোকজন তাকে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে শুভ’র মৃত্যু হয়। তার পরিবারের অভিযোগ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ সুজন কুমার সরকারের দায়িত্ব অবহেলার কারণে তার করুন মৃত্যু হয়েছে। এমন অভিযোগ ছড়িয়ে পড়লে মৃতের পরিবার, স্বজন ও হাসপাতালে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ইউএনও জুলিয়া সুকায়না ও ওসি এমদাদুল হক শেখ এ সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প কর্মকর্তা এ ঘটনায় মেডিকেল অফিসার ডাঃ নজরুল ইসলামকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি করেন। মৃতের মা শাহিদা বেগম জানান, সারা রাত শুভ’র পাশেই আমি ছিলাম। রাতে শুভ’র পিতা ডাক্তারকে বারবার ডেকেছে। কিন্তু ডাক্তার ভর্তি করার সময় ছাড়া সারা রাতের মধ্যে একবারও রোগীর কাছে আসেনি। বোন সুমি খাতুন জানান, ভাই আমার মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগেও সিষ্টার সিষ্টার বলে চিকিৎকার করেছে। সম্পূর্ণ চিকিৎসকের দায়িত্ব অবহেলার কারণে আমার ভাইয়ের করুন মৃত্যু হয়েছে। দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে ডাঃ সুজন কুমার সরকার জানান, রাতে ভর্তির সময় আমি তাকে দেখে শুনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। এরপর সারারাত আমাকে কেউ কোন কিছু জানাই নি। পরে ভোর পৌনে ৬টার দিকে আউট সোসিংএর নাছিমা খাতুন আমাকে রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ বলে জানায়। আমি তাৎক্ষনিক ভাবে রোগীর কাছে গিয়ে আধাঘন্টারও বেশি তার চিকিৎসা করি। সব ধরণের চেষ্টা করার পরও এক পর্যায়ে ভোর ৬.১০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়। মেনিন জাইটিস, এনক্যাফালাইটিস ও সেপটিসোরিয়াস জনিত সমস্যার কারণে তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছি। ওসি এমদাদুল হক শেখ জানান, উত্তেজনার খবর পেয়েই হাসপাতালে পুলিশ মোতায়ন করা হয়। যার ফলে অস্বাভাবিক কোন ঘটনা ঘটেনি। ইউএনও জুলিয়া সুকায়না জানান, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় কারো বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প কর্মকর্তা ডাঃ এএসএম মারুফ হাসান জানান, সকালেই আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত ছিলাম। রোগীর পরিবার ও তাদের স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ও চিকিৎসকের কোন গাফিলতা আছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তাৎক্ষনিক ভাবে ডাঃ নজরুল ইসলামকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সার্বিক বিষয় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
Leave a Reply