বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৪ অপরাহ্ন
মোঃ ইশারাত আলী :
কালিগঞ্জের গোবিন্দকাটি পোল্ট্রি খামার মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা লোপাট হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকরা সঞ্চয়ের টাকা ফেরৎ পাচ্ছেনা। তারা বিভিন্ন অফিস এবং প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। গ্রাহকদের অভিযোগ সমিতির সভাপতি কাম কোষাধাক্ষ্য গোবিন্দকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পশুপতি সরকার ও সাধারন সম্পাদক দিলীপ সরকার গ্রাহকদের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
উপজেলা সমবায় অধিদপ্তর ও গোবিন্দকাটি পোল্ট্রি খামার মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ সহ একাধিক সুত্রে জানা গেছে, সমিতিতে বর্তমান ৬৭৪ জন সদস্য। এর মধ্যে ২৫৪ জন মহিলা সদস্য এবং ৪২০ জন পুরুষ সদস্য। তাদের সঞ্চিত টাকার পরিমান ৫৩৯৬৩০৭ টাকা। বর্তমানে সঞ্চিত টাকা গ্রাহকদের ফিরিয়ে না দিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ভাগ বাটোয়ারা করে খাচ্ছে বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেছে। গ্
রাহকদের মধ্যে বিশেষ করে ২৫৪ জন মহিলা সদস্যর মধ্যে মাত্র ৬৬ জন মহিলা সদস্যর সঞ্চয় টাকা ১৬৮৩০০০ হাজার। অথচ তাদের প্রয়োজনে সঞ্চয় টাকা বিগত ৫-২ বছর যাবৎ ফেরৎ পাচ্ছেনা। বিগত ৫ বছর বিশেষ করে ২০১৮-১৯ সালের অডিট রিপোর্টে ৪,৭৮,০০০ হাজার টাকা, ২০২১-২২ সালের অডিট রিপোর্টে ৪,১৭,৫৪৬ টাকা, কর্জ পরিশোধ বাবদ পোল্ট্রি প্যাকেজ থেকে উত্তোলন করা ৬,৯৬,৫০০ টাকা এবং অন্য দপ্তরে চাকুরী করার পরও সভাপতি পশুপতি মন্ডলের গ্রহণ করা ২,১৭০০০ হাজার টাকা সহ দৃশ্যত প্রায় ২০ লক্ষ টাকা বার্ষিক রিপোর্টে গরমিল হিসেবে ধরা পড়েছে। যা সমিতির সভাপতি পশুপতি সরকার ও দীলিপ সরকারের ভাগ বাটোয়ারার করেছেন বলে গ্রাহকরা বলেছে।
প্রায় ৫০ জন সমিতির সদস্য তাদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরৎ না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হিসেবে ক্যামেরার সামনে কথা বলেছে। তাদের অধিকাংশ মহিলা এবং তারা অভিযোগ করেছে যে, তাদেরেকে সঞ্চয়ের টাকা না দিয়ে অনেককে হাকিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গোবিন্দকাটি পোল্ট্রি খামার মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর ২০২২ সালের জুলাই মাসের ২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে নবনির্বাচিত কমিটির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি বিগত কমিটির সভাপতি ও গোবিন্দকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পশুপতি সরকার ও সাধারণ সম্পাদক দিলীপ সরকার। কোন আইনে এবং কোন খুটির জোরে তারা বহাল তবিয়তে আছে তা গ্রাহকরা জানতে চায়।
গোবিন্দকাটি পোল্ট্রি খামার মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে ডিসি অফিস ও জেলা সমবায় অফিস বরাবর দরখাস্ত করা হলেও প্রতিকার পায়নি গ্রাহকরা। তাদের প্রশ্ন সমবায় আইন অনুসারে নবনির্বাচিত কমিটি নির্বাচনের ১৫ দিনের মধ্যে যদি ক্ষমতা বুঝে না পায় তবে পূর্ববর্তী কমিটি বিধান অনুসারে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এবং এ্যাডহক কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করবে। সে হিসেবে এই ৮ মাস কারা গোবিন্দকাটি পোল্ট্রি খামার মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ কুঙ্খিগত করে চালাচ্ছে এবং লুটপাট করেছে তা তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব জানিয়েছে গ্রাহকরা।
গোবিন্দকাটি পোল্ট্রি খামার মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর নবনির্বাচিত কমিটি দায়িত্বভার না বুঝে পেয়ে সাধারণ গ্রাহকদের বিতর্কের মুখে পড়েছে। সে কারনে নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি সুকুমার বিশ্বাস ও কোষাধাক্ষ্য সুভাষ চন্দ্র মন্ডল উপজেলা নির্বাহি অফিসার রহিমা সুলতানা বুশরা বরাবর তদন্ত করত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দরখাস্ত দিয়েছ। উপজেলা নির্বাহি অফিসার দরখাস্তটি অধিকতর তদন্ত করত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সমবায় অফিসার আকরাম হোসেনকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
এব্যপারে উপজেলা সমবায় অফিসার বলেন, বিষয়টি আমি জানি। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য তাদের বার বার তাগিদ দিয়েছি। কিন্তু তারা সমাধানের পথে হাটেনি। ইতিমধ্যে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। সমবায় আইন অনুসারে আমরা প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Leave a Reply