শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৩ অপরাহ্ন
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :
কালিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাকে মারপিট, জমি দখল ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কালিগঞ্জ থানার নারায়ানপুর গ্রামের মৃত.জয়নুদ্দীন মোড়লের পুত্র মো: আরশাদ আলী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, একই এলাকার আদর আলীর পুত্র আবুল হোসেন ইতোপূর্বে বিএনপি জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও সম্প্রতি কৌশলে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করে। একপর্যায়ে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়ে দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি, হিন্দুর বাড়িঘর ভাংচুরের মত জঘন্য কাজ করে যাচ্ছে। অথচ তার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনার ছবি ছিড়ে পদদলিত করা, পোড়ানোসহ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, আদালতের আদেশ অমান্য করে জোরপূর্বক অন্যের জমি জবর দখলকরা ৮/১০টি মামলা রয়েছে।
কালিগঞ্জের নারায়ানপুর মৌজায় আমার দীর্ঘদিনের ভোগ দখলীয় সম্পত্তির একটি ভূয়া দলিল করে অবৈধভাবে দখলের উদ্দেশ্যে চক্রান্ত করতে থাকে। এর জের ধরে গত ১০/০৫/২০১৯ তারিখে পবিত্র রমজান মাসে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে প্রকাশ্যে আমার গালে চড় মারে এবং কিলঘুষি মেরে আহত করে। সে দিন রোজা ছিলাম। আমার মত একজন বৃদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধাকে পবিত্র রমজান মাসেও মারপিট করতে দ্বিধাকরেনি। এছাড়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, মহান মুক্তিযুদ্ধকে কাটাক্ষ করেন। এবিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও অজ্ঞাত কারনে আইনানুগ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়না। বিষয়টি নিয়ে পত্র-পত্রিকায় একাধিক সংবাদও প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে গত ১৩/০২/২০২১ ইং তারিখে আমার পুত্র মো: রবিউল আলম তার কোবলা মূলে খরিদকৃত দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় বসতবাড়ীতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণকালে আবুল হোসেন বাহিনী নিয়ে আমার নির্মানাধীন প্রচীরের নিকট হাজির হয়ে নির্মাণ সামগ্রী নষ্ট করে। আমি বাধা দিতে গেলে পরিবারের সকলের সামনে আমাকে লজ্জা জনকভাবে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করে। আমি পূর্বে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার আদেশ শুনিয়ে দিলে তারা চলে যান এবং দুপুর ১টার দিকে ২ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও তার সহযোগীদের নিয়ে সেখানে আসেন এবং কাজ বন্ধ করার আদেশ দেন। তখন আমি তাদের কাছে পূর্বের অফিসার ইনচার্জের সিদ্ধান্তের কথা এবং কাজ বন্ধের লিখিত কোন আদেশ আছে কিনা জানতে চাইলে তখন তারা সদুউত্তর না দিতে পেরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এঘটনায় আবুল হোসেন পরের দিন আমার ও আমার পুত্রের নামে বেশ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করে। আমি একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের পূর্বে “বীর মুক্তিযোদ্ধা” শব্দটি ব্যবহারের রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য উক্ত সংবাদে আমার নামের পূর্বে ইচ্ছাকৃতভাবে বীরমুক্তিযোদ্ধা শব্দটি ব্যবহার করেনি। সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোচর হলে আমি পরের দিন বেশ কয়েকটি পত্রিকায় তার প্রতিবাদে সত্য ঘটনা উল্লেখ করে সংবাদ পরিবেশন করি। আবুল হোসেন ও তার সন্ত্রাসী আমাকে ও আমার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও আমার বসতবাড়ি ভেঙে উচ্ছেদ করার পায়তারা করছে। আমি এলাকায় যখন চলাফেরা করি তখন আবুল হোসেনের সহযোগীরা মুক্তিযোদ্ধাদেরকে জঘন্যভাবে কটাক্ষ করে। যা শুনে আমার মনে হয় জীবনবাজি রেখে কেন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। কাদের জন্য করেছিলাম? আজ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সকলেই শ্রদ্ধা জানালেও ওই অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসী আবুল হোসেনের কারনে চরমভাবে অপমানিত হচ্ছি, মুক্তিযোদ্ধারাও অপমানিত হচ্ছে। ওই আবুল হোসেন আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকায় আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে আমরা মনে করছি। তিনি ওই সন্ত্রাসী আবুল হোসেনকে দল থেকে বহিস্কার পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের উর্দ্ধতন নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Leave a Reply