বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৬ অপরাহ্ন
মোঃ ইশারাত আলী :
সাতক্ষীরা–৪ (কালিগঞ্জ- শ্যামনগর) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খাতা কলমে সাতজন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে নেমেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদীদল (বিএনপি) ও তার শরীক দল নির্বাচনে অংশ গ্হণ না করায় একরকম উত্তাপহীন একটি নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোটারদের হিসেব নিকেষ তাই বলছে।
সরকার দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকের এসএম আতাউল হক দোলন ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন–বিএনএম এর নোঙ্গর প্রতীকের প্রার্থী এইচ এম গোলাম রেজা এই দুজন প্রার্থী হিসেবে বর্তমানে মাঠে আছে প্রচার প্রচারণায়।
সাবেক এমপি এইচ এম গোলাম রেজা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা ৪ আসনে এমপি ছিলেন। পক্ষান্তরে নৌকা প্রতীকের এসএম আতাউল হক দোলন শ্যামনগর উপজেলার পরপর দুই বারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য এবং বর্তমান সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একে ফজলুল হকের পুত্র। এই দুইজন জননেতার মধ্যে ভোটের হিসেব নিকেষ করছে দলীয় ভোটাররা।
তবে চায়ের দোকানে আড্ডা নেই, হারজিতের ঝড়তোলা তর্ক নেই, দলীয় সাপোর্টারদের উদ্মাদনা নেই। এক রকম উচ্ছাসহীন দায়সারা গোছের একটি নির্বাচন হচ্ছে বলে মনে করেন সাধারণ ভোটাররা।
সাবেক এমপি এইচ এম গোলাম রেজার সাপোর্টার কালিগঞ্জের দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দকাটি গ্রামের মুকুল বিশ্বাস। তিনি বলেন যে, ভোট নিরোপেক্ষ হলে আমরাই জিতবো। অন্যদিকে একই গ্রামের নৌকা প্রতীকের সাপোর্টার অনিমেষ বলেন যে, আমরাই জিতবো।
ভোটের মাঠে সাবেক এমপি এইচ এম গোলাম রেজা ও নৌকা প্রতীকের এসএম আতাউল হক দোলন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করবেন বলে মনে করেন তাদের সাপোর্টাররা। দুজনই পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ভোট উৎসব দেখতে পারে সাতক্ষীরা ৪ আসনের ভোটাররা।
এদিকে জাতীয় পার্টির (এ) মাহবুবর রহমান, তৃণমুল বিএনপির আসলাম আল মেহেদী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো: সফিকুল ইসলাম, এনপিপির শেখ একরামুল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন মুখ। রাজনৈতিক পারদর্শীতাহিনতার কারনে ইতিমধ্যে প্রচারণায় পিছিয়ে পড়েছেন। নির্বাচনী কোন সভাসমাবেশে তাদের দেখা যাচ্ছেনা এমনকি তারা নির্বাচনী এলাকায় দলীয় কমিটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ভোটাররা।
এব্যাপারে তৃণমুল বিএনপির আসলাম আল মেহেদীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিয়মিত শ্যামনগর ও কালিগঞ্জে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছি সাথে সাথে জনসভা না করে উঠোন বৈঠক করছি এবং আমি নির্বাচনী প্রচারনার মধ্যে আছি।
তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন যে, বড় দুই দলের প্রার্থী নির্বাচনী আচারণ বিধি লঙ্ঘন করছে। তারা তিনের অধিক মাইক ব্যবহার করছে। যেখানে সেখানে পোস্টার, ব্যানার লাগাচ্ছে যেন কোন নিয়মনীতির বালাই নেই। বিষয় গুলো তিনি সাংবাদিকদেরও বলতে পারছেনা কারন সাংবাদিকরা নাকি তার কাছে শুধু টাকা চায়।
অবশ্য অনেক ভোটারের মন্তব্য যে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা ৪ আসনে ৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫ জন প্রার্থীকে আমরা এর আগে দেখিনি। এবার তারা নির্বাচনের মাঠে নতুন এসেছে। তাদের অফিস নেই, কর্মী নেই, তাদের ভোট দিলে আমরা তাদের খুঁজে পাবনা।
এদিকে কালিগঞ্জ–শ্যামনগর-৪ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৪২ হাজার ১৯৩জন। তবে কত শতাংশ ভোটার ১৪২টি ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসবেন তার উপর জয় পরাজয়ের হিসেব নিকেষ নির্ভর করছে।
আওয়ামীলীগের দলীয় রিজার্ভ ভোটের ভরসায় জয়ের স্বপ্ন দেখছে সরকার দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এসএম আতাউল হক দোলনের সাপোর্টাররা। অন্যদিকে এইচ এম গোলাম রেজার সাপোর্টাররা মনে করেন যে, ভোট নিরেপেক্ষ হলে তাদের প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন–বিএনএম এর নোঙ্গর প্রতীকের এইচ এম গোলাম রেজা শেষ হাসি হাসবেন।
Leave a Reply