বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৭ অপরাহ্ন
কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি :
পৃথক পৃথক ২১ টি খাতের বিভিন্ন চাহিদার বিপরীতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে সেবা খাতে বরাদ্দ ৬ লক্ষ ৯ হাজার ১ শত ৮৩ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। কাউকে না জানিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার এর মাধ্যমে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে স্টাম, ভ্যাট, আই টি বাদে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছে। উত্তোলনকৃত সেবা খাতের টাকা বিদ্যালয় এর একাউন্টে না রেখে নিজের ব্যক্তিগত একাউন্টে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় গতকাল দ্রুত সাতক্ষীরা থেকে কিছু মালামাল কিনে এনে দায় উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার সরকারি কালিগঞ্জ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক, কর্মচারীরা সাংবাদিকদের জানান ২০২২ -২৩ অর্থ বছরের চাহিদার বিপরীতে বিভিন্ন বিভাগের সেবা খাতে ৬ লক্ষ ১ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। উক্ত টাকা গুলোর কাজ ৩০ শে জুনের মধ্যে সম্পাদন করে উত্তোলন করার কথা ছিল।
কিন্তু প্রধান শিক্ষক বরাদ্দের টাকার বিষয়ে বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক কর্মচারীকে না জানিয়ে ৩০ জুন বিভিন্ন দোকান থেকে তার সহযোগি গুটি কয়েক শিক্ষকদের নিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে জমা দিয়ে সমুদয় টাকা উত্তোলন করে।
উত্তোলনকৃত টাকা কোন শিক্ষক-কর্মচারীদের না জানিয়ে তিনি তার নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে জমা করেন। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীর মধ্যে দারুন ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং ওই সময় বিক্ষিপ্ত শিক্ষক কর্মচারীরা তার নিকট জানতে চাইলে প্রথমে অস্বীকার গেলেও পরবর্তীতে স্বীকার করে।
তবে কত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং কত টাকা বরাদ্দ ছিল এ বিষয়ে কাউকে কিছু পরিষ্কার করেনি। পরে উপায়ান্তর না পেয়ে গত মঙ্গলবার বেলা ১২ টার সময় বিদ্যালয় ভবনে শিক্ষক কর্মচারীদের নিয়ে সভা ডাকে। উক্ত সভায় টাকার কথা স্বীকার করলেও প্রকৃতপক্ষে কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে এবং কত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং উত্তোলনকৃত টাকা স্কুল ফান্ডে না রেখে কোথায় রাখা হয়েছে এ ব্যাপারে কোন সঠিক ধারণা দেওয়া হয়নি । তবে স্কুলে ৫ লাখ টাকা পাওয়া গেছে এমনটি জানানো হয়।
পরে বিষয়টির দায এড়াতে তড়িঘড়ি করে নিজের পকেটের কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে সাতক্ষীরায থেকে কিছু মালামাল কেনার জন্য যায়। বর্তমান বিষয়টি নিয়ে ওই স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার মোঃ নাজিম উদ্দীন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন যে, প্রধান শিক্ষককে বিভিন্ন ভাউচারের বিনিময়ে স্টাম, ভ্যাট, আইটি, বাবদ ৫৮,৬৩১ বাদে ৫ লক্ষ ৫১ হাজার ৫৫২ টাকা প্রদান করা হয়েছে। তার অনিয়মের জন্য বার বার আমি তার বিল ভাউচার ফিরিয়ে দিয়েছি এবং আমি তাকে সাবধান করেছি। তবে টাকা কোথায় রেখেছে সে ব্যাপারে তাদের কোন জবাবদিহিতা নেই বলে জানান। বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যাপার।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক গোপাল গাইনের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে টাকা এবং বরাদ্দের বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। টাকা কোথায় রেখেছেন এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর মেলেনি তবে পরে জানাবেন বলে জানান। সাথে সাথে সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকী প্রদান করেন।
Leave a Reply