January 31, 2025, 12:15 am
মোঃ ইশারাত আলী:
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বন্ধকাটি গ্রামে আশ্রয়কেন্দ্র (মুজিব কিল্লা) নির্মাণের ১৪ মাসের মধ্যে প্লাস্টার খসে পড়তে শুরু করেছে।
সিডিউল অনুযায়ী সঠিক মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করে প্রকল্পের কাজ যেনতেন ভাবে করার কারনে এমন অবস্থা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ সেসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল সে বিষয়ে যদি সঠিক তদন্ত হতো তবে এমন দুরাবস্থা হতোনা। আমরা ঐ অভিযোগের তদন্ত চাই। সুষ্ট তদন্ত হলে নাটের গুরু কারা সে বিষয় জানা যাবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বন্ধকাটি গ্রামে দুই কোটি ৮ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা ব্যায়ে আশ্রয় কেন্দ্র (মুজিব কিল্লা) নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মানের ১৪ মাসের মধ্যে মুজিব কিল্লার প্লাস্টার খসে পড়তে শুরু করেছে এবং এর সাথে দেওয়াল ও ভিটের একাধিক জায়গায় বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কারনে দুর্যোগকালিন সময়ে আশ্রয় কেন্দ্রটি ব্যবহারে মারত্বক ঝুকি বেড়েছে।
ঘুর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানার ৮ মাস পরে বিষ্ণুপর ইউনিয়নের বন্দকাটি গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত বাস্তচ্যুত পরিবারের সাথে কথা বলতে গেলে ২৭ জানুয়ারী ২০২৫ সোমবার সকালে এই দৃশ্য সামনে আসে। মুজিব কিল্লাটি গত ১৪ নভেম্বর ২০২৩ উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি।
কিন্তু নির্মাণের ১৪ মাসের মধ্যে প্লাস্টার খসে পড়েছে রং নষ্ট হয়ে গেছে, লোহার এঙ্গেলে মরিচা ধরেছে এবং ব্যবহারে অনুপোযোগী হয়ে উঠেছে। প্লিয়ার ফাটল ধরেছে সামনে ব্লক এবং ভীটে ফাটল ধরেছে এবং এর সাথে স্টিলের দরজায় মরিচা ধরেছে। যার ফলে ভবনটি এখন জরাজির্ণ প্রায়। ভবন নিজেই দুর্যোগের কবলে।
স্থানীয়দের অভিযোগ নির্মাণে ৩ নম্বর ইট ও আমা ইটের খোয়া, চিকন বালি এবং নিন্মমানের সিমেন্ট ব্যবহার করার কারনে এমন বেহাল অবস্থা। যা সরেজমিন দেখা গেছে।
বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য খলিল সরদার বলেন, কালিগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মিরাজ হোসেন খান এর তত্ত্বাবধায়নে ২ কোটি ৮ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা ব্যয়ে মুজিব কিল্লা নির্মাণ করা হয়। তিনি শুরু থেকে (পিআইও) নিন্মমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করেছে। বিষয়টি নিয়ে ততকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম বরাবর একটি আবেদন দিয়ে ছিলাম। কিন্তু তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। এমত অবস্থায় বন্দকাটি মুজিব কিল্লাটি উদ্বোধনের ১৪ মাসের মধ্যে প্লাস্টার খসে পড়তে শুরু করেছে। অথচ দরখাস্তের পরও আজ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোন পদক্ষেপ নেননি। তারা কি পদক্ষেপ নিয়ে ছিলেন তারাই জানে। আপনি বিষয়টি তাদের কাছে জানতে পারেন।
বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন যে, নির্মানের সময় নিন্মমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকল্পের অর্থ যথাযথ ভাবে ব্যবহার করা হয়নি। যার ফলে নির্মানের ১৪ মাসের মধ্যে এমন দুরাস্থা তৈরী হয়েছে।
এমন একটি অভিযোগের বিষয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন এর নিকট জানতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। দুইদিন আগে হটসঅ্যাপ ম্যাসেজ করলেও তিনি কোন উত্তর দেননি।
বন্দকাটি মুজিব কিল্লার বেহাল দশা নিজে সরেজমিন তদন্ত করবেন কিনা বা কি পদক্ষেপ নিবেন জানতে চাইলে, কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল বলেন যে, বিষয়টি আমি সরেজমিন দেখবো এবং মাসিক মিটিংয়ে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।
Leave a Reply