কালিগঞ্জে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সকল কার্যক্রম বাতিল, নতুন নির্দেশনা এলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ………সাতক্ষীরা জেলা কালচারাল অফিসার ফাইজা হোসেন অন্বেষা

মোঃ ইশারাত আলী :
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সকল কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে। সরকারী পরিপত্র অনুযায়ী নতুন নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবেনা মর্মে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা জেলা কালচারাল অফিসার ফাইজা হোসেন অন্বেষা। কালিগঞ্জের শিশুরা সাংস্কৃতি চর্চা থেকে একটি প্রজন্ম পিছিয়ে গেছে জেনে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বলেছেন বিষয়টি দুঃখ জনক।
কালিগঞ্জ উপজেলার শিল্পকলা একাডেমির সাংস্কৃতি চর্চা দুই যুগ বন্ধ থাকার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন সাতক্ষীরাতে স্থায়ীভাবে কালচারাল অফিসার ছিলনা। আমি প্রথম এলাম। আমি সবার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ব্যতিত নতুন কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবেনা। নতুন নির্দেশনা এলেই আমি পদক্ষেপ নিতে পারবো।
প্রশাসনিক অবহেলা দৃশ্যমান, জবাবদিহিতার অভাব এবং আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে স্থানীয় সংস্কৃতি অঙ্গন আজ চরম সংকটে এমন বিষয়ে তিনি বলেন বিষয়টির সাথে স্থানীয় পর্যায় যারা জড়িত এব্যাপারে তারা জবাবদিহিতা করবে।
উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির কার্যনির্বাহী/এডহক কমিটি বাতিলের ক্ষেত্রে আপনারা কোন চিঠি করেছেন কি না বা ৪৩.২০.০০০০.০১২..৩৬.০০১.২৪.৬৭ নম্বরের স্বারক বহাল থাকবে কি না? তিনি বলেন একই নির্দেশনা বহাল থাকবে নতুন নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত।
এবিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুজা মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি পরিপত্রের কোন কপি পাইনি। আমি কালচারাল অফিসারের সাথে কথা বলে আপনাকে জানাবো।
এদিকে বিষয়টি ঘিরে কালিগঞ্জে সুধী সমাজে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কালিগঞ্জের শিল্পকলা একাডেমির এমন দশা নিয়ে স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মী এ্যাডভোকেট জাফর উল্যাহ ইব্রাহিম বলেন আমরা আরও দুইযুগ আগে ৩০০ টাকা দিয়ে শিল্পকলা একাডেমির সদস্য হয়েছিলাম। বর্তমানে কালিগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমি কাগজে কলমে থাকলেও কাজে নেই।
একটি প্রশ্নের জবাবে কালিগঞ্জের শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সদস্য ও উদিচি শিল্পগোষ্টির সাধারণ সম্পাদক শান্তি চক্রবর্তী বলেন আমরা কেউ সদস্য ফি বাবদ ৫০০ টাকা এবং বাৎসরিক চাঁদা ৩০০ টাক দেইনি। কিভাবে চলে তারাই জানে। এককালিন দশ হাজার টাকা দিয়ে কেউ আজীবন সদস্য হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন কেউ বাৎসরিক চাঁদা ৩০০ টাকা দেয়না সেখানে আজীবন সদস্য হওয়ার প্রশ্নই আসেনা।
প্রতি বছর জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে বাজেট এলেও, সেই অর্থের কোনো স্বচ্ছ ব্যবহার হয় কিনা জানতে চাইলে শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সঙ্গীত শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোন টাকা কোন খাতে ব্যয় হয় আমি জানিনা। বায়ান্ন হাজার টাকার একটি অনুদান কোথায় কিভাবে ব্যবহার হয়েছে বা কার পকেটে আছে সেটি আমার জানা নেই।
দুই যুগ ধরে অচল কালিগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমির বিরুদ্ধে এমনও অভিযোগ শোনা যায় যে, একাডেমির ব্যনারে ইটভাটা, ক্লিনিক, ঠিকাদার সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অনুষ্ঠানের নামে চাঁদা গ্রহণ করা হয়। মোবাইল কোর্টের ভয় দেখিয়ে প্রশাসনের তরফে এমন ভয় দেখানো নাকি তাদের নিয়মিত ব্যাপার। যার কারনে তারা নিয়মিত চাঁদা দিতে বাধ্য হন।
এদিকে কালিগঞ্জ উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুজা মন্ডল ও সাতক্ষীরা জেলা কালচারাল অফিসার ফাইজা হোসেন অন্বেষার বক্তব্য ঘিরে সাংস্কৃতি অঙ্গনে নতুন করে বিতর্ক শুরু হলে দেশ বরেন্য সাহিত্যিক কালিগঞ্জের কৃতি সন্তান অধ্যাপক গাজী আজিজুর রহমান বলেন, কে কি বল্লো এ নিয়ে বিতর্ক নয়। কালিগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম সচল না থাকা দুঃখ জনক। কমিটি থাকবে সাংস্কৃতিক চর্চা হবেনা বিষয়টি বিস্ময়কর। আমাদের একটি প্রজন্ম পিছিয়ে গেছে। সেই সময়কার মোমেন, আব্দুল্লাহ, জুলু ছাড়া নতুন কেউ তৈরী হয়নি। এই শুন্যতা পুরণ করা কঠিন। শিল্পকলা একাডেমি আবার সচলা হলে শিশুরা প্রাণ ফিরে পাবে।









