সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন

কালিগঞ্জে ২৮ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল, যাচাই বাছাই সম্পন্ন।

কালিগঞ্জে ২৮ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল, যাচাই বাছাই সম্পন্ন।

কালিগঞ্জ প্রতিনিধি :

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক কালিগঞ্জ উপজেলায় ৯৪ জন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তালিকা যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করা হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্যসহ ২৮ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা পেয়েছে সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি। গত ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১ কালিগঞ্জ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির ৫ সদস্য স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে ঐ ২৮ জনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ঢুকে পড়েছে, এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তালিকা তৈরীর সময় বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ শোনা গেছে বার বার। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ তৈরী করে সরকারি সুযোগ সুবিধা গ্রহণর অভিযোগ অনেকের বিরুদ্ধে।

মুকিযোদ্ধাদের ভুয়া তালিকা ঠেকাতে বিভিন্ন কৌশলে নানা ধরণের যাচাই বাছাই করা হয়েছে বার বার। কালিগঞ্জে ভুয়া সনদ তৈরী ও অনিয়ম রোধে যেই ভুমিকা রেখেছে তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষঢ়যন্ত্র করে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তালিকা প্রকাশের পর অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে। বলা হচ্ছে ৬৫ জনের যে তালিকা রয়ে গেছে সেখানে কিছু ভুয়া সনদ ধারী মুক্তিযোদ্ধা আছে। তাদেরকেও বাদ দেওয়া হোক।

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত তালিকা নিয়ে নতুন করে আরেকটি ষঢ়যন্ত্র তৈরী হচ্ছে মর্মে খোদ উপজেলা নির্বাহি অফিসার খন্দকার রবিউল ইসলাম “ইউএনও কালিগঞ্জ সাতক্ষীরার ফেসবুক আইডি”র মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাসে বলেন-বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা অন্য কোন নামে যাচাই-বাছাইয়ের নামে নোটিশ বা কোন ফোন নম্বর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই ইত্যাদি কথা বলে হয়রানি করছে মর্মে শোনা গেছে। এ বিষয়ে কোনরকম আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। কোন বিকাশ নম্বরে বা সরাসরি কোন ব্যাপারে কারো কথায় কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন করবেন না বা ভুয়া যাচাই-বাছাই এ অংশগ্রহণ করবেন না। 01754736571 নম্বরে ফিরতি কল করে জানানোর জন্য অনুরোধ করছি।

এ পর্যন্ত মোট ছয়বার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হয়েছে। আর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞাও নির্ধারণ করা হয়েছে অনেকবার। তারপরেও কালিগঞ্জ উপজেলায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ হয়নি।

১৯৯৯ সালে প্রকাশিত সাপ্তাহিক মুক্তিবার্তা (সবুজ) পত্রিকায় কালিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে ২’শ ৩৬ জন, পরবর্তিতে সরকারী ভাবে কালিগঞ্জে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ৩’শ ৭৩ জন দেখানো হয়েছে। অপরদিকে একই উপজেলায় ই-পেমেন্ট ভাতা প্রদানের তালিকায় সুবিধাভোগী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দেখানো হয়েছে ৪’শ ৪ জনকে।

দেশ স্বাধীনের পর থেকে এপর্যন্ত কালিগঞ্জে ১শ৫২ জনের অধিক মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলেও এখনো তার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। আবার তাদের নামে বেনামে অনেকে সরকারী অর্থ আত্মসাৎ করছে বলে অভিযোগ আছে।

এদিকে তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সামরিক ও বেসামরিক, ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রণীত মুক্তিবার্তায় অন্তর্ভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা সকলের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

ইতোমধ্যে সারা দেশে প্রায় দশ হাজারের মত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে। সাথে সাথে তাদের দেয়া সুযোগ সুবিধাদি সরকারী তরফে ফেরত দিতে বলা হয়েছে। তবে এই অনিয়মের কারনে কারো বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা বা কোন ভুয়া সনদধারী মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল কিম্বা কারো বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা এখনো নেয়া হয়নি ।

তার পরেও আগামী ২৬শে মার্চ মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং এ মাসেই খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানাগেছে।

(ফলোআপ,,,,,,চলবে,,,,,)

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2013 www.satkhiranews24.com
Hosted By LOCAL IT