January 22, 2025, 8:15 am
মোঃ ইশারাত আলী, কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি :
বিলের মধ্যে একটি মাটির ঘর। ঘরের চালে খড় নেই। গত ৮ মাস আগে ঘুর্ণিঝড় রেমাল এ উড়ে গেছে ঘরের ছাউনি। খড় নেই তাতে। প্রচন্ড শীতে উত্তরের ঠান্ডা কনকনে হাওয়ায় কুকড়ে গেছে আমেনা খাতুন ও তার স্বামী শেখ আনছার আলী। শীতের রাতে একটি কুড়ে ঘরে কোন রকমে তারা মাথা গুজে বসবাস করছে।
আমেনা খাতুন (৫৫) গৃহিণী ও তার স্বামী শেখ আনছার আলী (৬৯) দিনমজুর। ২০২৪ সালে ২৬ মে রেমাল ঝড়ে ঘর উড়ে যাওয়ার পর বিলের মধ্যে প্রচন্ড শীতে তারা অমানবিক জীবন পার করছে। শুধু আমানে খাতুন বা ফাতেমা খাতুন নয় এমন পরিবার আরও অনেক আছে।
আমেনা খাতুন সাতক্ষীরা নিউজ ২৪ এর প্রতিনিধিকে বলেন, “পুজি না হলি কি দে করবো, পুজিডার দরকার হয়না? এদিক নিজিগা তাই প্যাট চুলতেছে না। তা ঘর সৈইর করবো কি দে?”।
সরে জমিনে দেখা গেছে, কালিগঞ্জ উপজেলার ৯নং মথুরেশপুর ইউনিয়নের মকুন্দপুর গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের আমেনা খাতুন ও তার স্বামী শেখ আনছার আলী সহ উপজেলার অধিকাংশ গ্রামে ঘুর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্থ দরিদ্র পরিবার রয়েছে। ১২টি ইউনিয়নের প্রায় সবকটি গ্রামে ঘুর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানে। এসময় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ প্রাণে বাঁচাতে আশ্রয় কেন্দ্রে আসে। কোনোমতে প্রাণ বাঁচাতে পারলেও ঝড়ে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে যায় গৃহস্থালীর জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যায় ঘরে থাকা লেপ-তোষক, বালিশ ও শীতবস্ত্র।
নতুন বছরের শুরুতে কালিগঞ্জে জেঁকে বসেছে শীত। রেমাল ঝড়ে লেপ-তোষকসহ শীতবস্ত্র হারিয়ে এখন সেই ক্ষতিগ্রস্থ মানুষরা অমানবিক জীবনযাপন করছেন। বিশেষ করে নিম্মআয়ের কৃষি ও শ্রমজীবী পরিবারের লোকজন অর্থাভাবে শীতবস্ত্র কিনতে না পেরে ছেড়া কাপড় ও কাঁথা দিয়ে কোনোমতে শীত নিবারণ করছে।
মকুন্দপুর গ্রামের ফাতেমা খাতুন বলেন, ঝড়ে ঘর পড়ে যাওয়ার পরে সব কাপড়-চোপড় নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ছাপড়া তৈরী করে আছি। কোন সহযোগিতা না পেলে আমি স্থায়ী ঘর তৈরী করতে পারবোনা। তার উপর রোগ ব্যয়রাম আছে।
এব্যপারে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুজা মন্ডল বলেন, গত বছর রেমাল ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে মানুষের যে শীতবস্ত্র ছিল সেটি নষ্ট হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে শীত বস্ত্র বিতরণের জন্য আমরা কিছু কম্বল পেয়েছি। আমরা তালিকা পেলে তাদের মধ্যে সেগুলো বিতরণ করবো। রেমাল ঝড়ে বাস্তচ্যুত পরিবার নিয়ে আপাতত আমাদের কোন পরিকল্পনা নেই। ##
Leave a Reply