ইশারাত আলী :
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ৫ বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে ভর্তি না নিলে দ্রুত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। মেডিকেলের ডাক্তাররা অপারগতা প্রকাশ করলে শেষমেষ তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে কালিগঞ্জর পিরোজপুর গ্রামে ১১ সেপ্টেম্ববর বেলা ২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে একটি প্রভাবশালী মহল। চাপা গুঞ্জন তৈরী ও খবরটি ফাঁস হলে আজ ১২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে শিশুটির মামী মৌসুমী খাতুন, ভাই আবির হোসেন, প্রতিবেশী মোহাম্মদ আলী, তৌফিক, আজমির, মহিউদ্দিন, রামপ্রসাদ জানান যে, বৃহস্পতিবার বাড়ির পাশে রাস্তার উপর শিশুটি খেলা করছিল। ঐ সময় নাঈম, সিয়াম এবং শফিকুল শিশুটির খাওয়ার দেওয়ার নামে ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। ঘরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে খাটের উপর ফেলে ৩ জন মিলে মুখ, হাত-পা চেপে ধরে জোরপূর্বক পালাক্রমে শিশুটিকে ধর্ষণ করে।
ধর্ষক নাঈমের মা জেসমিন বেগম স্থানীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রে চাকুরী করে। মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে ফাঁকা বাসায় ধর্ষকরা শিশুটিকে ডেকে এনে ধর্ষণ করে। বাড়ীতে না পেয়ে সোহেল রানা তার মেয়েকে খুঁজতে বের হয়। শিশুটির পিতা সোহেল রানা ঐ ঘরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় গোঙানির শব্দ শুনতে পায়। এসময় ঘরে ঢুকলে তাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে ৩ ধর্ষক পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা ৩ ধর্ষককে পার্শ্ববর্তী মতির ইটভাঁটা থেকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। ঐ সময় ধর্ষকদের পক্ষে পানিয়া গ্রামের সোহেল রানা মামলা না করার জন্য শিশুটির পিতা সোহেল রানাকে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হলো পিরোজপুর গ্রামের রেজাউল ইসলামের পুত্র নাঈম (১৪), তার ভাই সিয়াম (১২) এবং একই গ্রামের আবু সাঈদের পুত্র ভ্যানচালক শফিকুল ইসলাম (১৫)। ঘটনায় শুক্রবার ভুক্তভোগী শিশুটির পিতা সোহেল রানা বাদী হয়ে কালিগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে ধর্ষক নাঈম ও সিয়ামের মা জেসমিন খাতুন বলেন আমি বাড়িতে ছিলাম না। এখানে কি হয়েছে আমি বলতে পারবোনা। এখানে এসে শুনি আমার ছেলেকে ধরে স্থানীয়রা পুলিশে দিয়েছে। কালিগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান ধর্ষণ কা-ের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুল ইসলাম পিরোজপুর গ্রামে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন এবং তিনি বলেছেন যে, ঘটনাটি দুঃখ জনক, আসামীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।