মোঃ ইশারাত আলী :
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ওয়েবসাইট খোলা থাকলেও অধিকাংশ ক্যাটাগরি অকেজো। সাব-ক্যাটাগরিতে আপডেট কোন তথ্য নেই। এই ওয়েবসাইট ভিজিট করে কোন তথ্য পাওয়া যায়না। কোনোটি শুধু নামেই আছে, কাজে নেই। কোনোটির তথ্য থাকলেও তাতে গরমিল কোনো কোনো ক্যাটাগরি কিংবা সাব-ক্যাটাগরিতে আবার তথ্যই নেই। জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি তথ্য ও সেবা পৌঁছে দিতে নির্মাণ করা কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডলের ওয়েবসাইট ভিজিট করে এমন বেহাল অবস্থা দেখা গেছে।
উপজেলা প্রশাসনের মূল ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত চালু করা এসব ওয়েবসাইট আপডেট হয় নামমাত্র। নিয়মিত তথ্য-উপাত্ত আপডেট না হওয়ায় ওয়েবসাইটগুলো ভিজিট করে তথ্য না পাওয়ায় অর্থদন্ড ও হয়রানীর স্বিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ www.bangladesh.gov.bd ২০১৪ সালের ২৩ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হলেও আজ অবধী কোন কোন দপ্তরের ওয়েবসাইট একেবারেই আপডেট হয়নি। https://kaliganj.satkhira.gov.bd/bn/site/view/uno ওয়েবসাইটের সরকারী অফিস ক্যাটাগরিতে আছে ৪১ টি দপ্তর, অধিদপ্তর বা প্রতিষ্ঠান। ৪-৫ টি দপ্তরের ওয়েবসাইট ৫০% তথ্য আপডেট থাকলেও বাকী কোন ওয়েবসাইট হাল নাগাদ নেই। গত ১৫ দিনে বিভিন্ন দপ্তরের ওয়েবসাইট ও সংশ্লিষ্ট অফিসারদের সাথে কথা বলে এমন লোম হর্ষক চিত্র ফুটে উঠেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ওয়েবসাইট থেকে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স। আগুন লাগলে সবার আগে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভায়। http://fireservice.kaliganj.satkhira.gov.bd/bn/site/view/officer_list
এই লিংকে ক্লিক করলে স্টেশন অফিসার মোঃ হাবিবুল্লাহ ও তার মোবাইল নম্বর চলে আসে। প্রয়োজনে তাকে ফোন দিয়ে জানা গেলো তিনি ২০১৬ সালে কালিগঞ্জ ছেড়ে চলে গেছেন। বর্তমানে কালিগঞ্জে স্টেশন ইনচার্জ হিসিবে নতুন আরেকজন কর্মকর্তা যোগদান করেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সরকারী সুবিধা অসুবিধায় এখানে ক্লিক করলে http://pio.kaliganj.satkhira.gov.bd/bn/site/view/officer_list ১বছর আগে চলে শ্যামনগর উপজেলায় পোস্টিং নিয়ে চলে যাওয়া মিরাজ হোসেন খানের নাম ও মোবাইল নাম্বার পাওয়া যায়। অথচ বর্তমানে কুষ্টিয়া থেকে আগত একজন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কালিগঞ্জে যোগদান করেছেন।
উপজেলা আনছার ভিডিপি কর্মকর্তা হিসেবে ২০২১ সালে কালিগঞ্জ থেকে বাগেরহাট, সেখান থেকে বর্তমানে তিনি যশোরে পোস্টিং নিয়ে চাকুরী করছেন অথচ আনছার ভিডিপির ওয়েব সাইটে ক্লিক করলে ৪ বছর আগের কর্মকর্তা http://ansarvdp.kaliganj.satkhira.gov.bd/bn/site/view/officer_list মোছাঃ শাহিনা আক্তারের নাম ও তার ঠিকানা চলে আসে। শাহিনা আক্তারের বক্তব্য আমাকে এখনো কালিগঞ্জের মানুষ সেখানের অফিসার হিসেবে জানে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কালিগঞ্জ অফিস সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। http://bwdb.kaliganj.satkhira.gov.bd/এখানে কর্মকর্তা হিসেবে মোঃ রাশিদুর রহমানের নাম লেখা আছে। ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর থেকে তিনি কালিগঞ্জের ওয়েবসাইটে আছেন। কোন পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু বর্তমানে শুভেন্দু বিশ্বাস এই দপ্তরের কর্মকর্তা। অথচ কোন তথ্য নেই এখানে।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী লিমিটেড (বিটিসিএল) http://btcl.kaliganj.satkhira.gov.bd/ এর ওয়েবসাইটে কোন তথ্য নেই। তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তার নাম শেখ ফারুক উল ইসলাম টেলিফোন অপারেটর। তিনি কালিগঞ্জে থাকেননা। তিনি পোস্টিং নিয়ে খুলনাতে আছেন।
ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ, অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়সহ প্রায় ২৫ হাজার সরকারি দপ্তরের ওয়েবসাইটের সন্বিতরূপে বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ নামক ওয়েব পোর্টাল চালু করে বাংলাদেশ সরকার।
এ সাইটের সঙ্গে লিংক করে উপজেলার ১৯টি সরকারি দপ্তর এবং ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের নামেও আলাদা আলাদা তথ্য বাতায়ন ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছিল। কিন্তু কালিগঞ্জ উপজেলার মূল ওয়েবসাইট থেকে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত চালু করা মোট ২০টি সাইটের কোনোটিই নিয়মিত আপডেট নেই। ভিজিট করে দেখা যায়-উপজেলার এলজিইডি, পিআইও, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, কৃষিসহ অন্যান্য বিভাগ এবং ছয়টি ইউনিয়নের ওয়েবসাইটগুলোর বেশির ভাগ ক্যাটাগরিতে তথ্য-উপাত্ত নেই। সবচেয়ে বেশি দুর্দশা উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ওয়েবসাইটগুলোর। সেগুলোর কোনো কোনোটিতে এখনো হাতই পড়েনি কর্তৃপক্ষের।
কালিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের মূল ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে দেখা গেছে, নোটিশ বোর্ডে ২০২৫ সালের ৫মাসে মাত্র ৫টি নোঠিশ আছে। চলতি বছরের কোনো মৌলিক তথ্য-উপাত্ত নেই সেখানে। ই-মোবাইল কোর্টে ফাঁকা, কোন ক্যাটাগরিতে সঠিক কোন আপডেট নেই। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ক্লিক করলে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একটি বাজেট আপলোড করা আছে। কিন্তু সেটি ৫ আগস্টের পরে একটি বিতর্কিত বাজেট হিসেবে চিহ্ণিত হয়েছে।
ওয়েবসাইটটের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ক্লিক করে দেখা যায়, সাব-ক্যাটাগরিতে কোনো তথ্যই এন্ট্রি করা নেই। ইউনিয়ন পর্যায়ের ওয়েবসাইটগুলো ভিজিট করে দেখা যায়, নামমাত্র মৌলিক কিছু তথ্য অনেক আগে আপডেট করে রাখা হয়েছে। তবে চলতি বছরের তেমন কোনো তথ্য নেই বললেই চলে।