বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৭ অপরাহ্ন

শ্যামনগর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কর্তৃক সরকারী বই বিক্রির চেষ্টা ব্যর্থ

শ্যামনগর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কর্তৃক সরকারী বই বিক্রির চেষ্টা ব্যর্থ

ইশারাত আলী:

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে মৌতলা বাজারে বিশ্বজিতের ভাংড়ির দোকানে মাধ্যমিক স্তরের ৩ হাজার ৪শত কেজি ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণীর  সরকারী বই বিক্রয়ের চেষ্ঠাকালে ব্যর্থ হয়েছে এক মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। ঐ শিক্ষা অফিসারের নাম আকরাম হোসেন খান।  তিনি শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন।

মৌতলা বাজারে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর বই বিক্রয়কালে স্থানীয় জনগন তিনটি ইঞ্জিনভ্যান ভর্তি বই আটক করে। পরে  ৩ হাজার ৪শত কেজি বই মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদে রাখে। এসময় ঐ শিক্ষা অফিসার ঘটনা স্থলে নিজেই উপস্থিত ছিলেন বলে জানাগেছে।

ঘটনার বিবরনে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১২ জুন) দুপুরের পরে শ্যামনগরে থানার পাশে নুরুজ্জামানের ভাংড়ির দোকান থেকে মৌতলা বাজারের ভাংড়ির দোকানদার বিশ্বজিৎ কর্মকারের কাছে ফোন আসে বই ক্রয়ের জন্য। নুরুজ্জামান ১৬ টাকা দরে৩ হাজার ৪শত কেজি বই ক্রয়ের প্রস্তাব করে এবং প্রাথমিক চুক্তি চুকিয়ে মৌতলা বাজারে বই বিক্রি করতে পাঠায়।

এসময় স্থানীয় জনতা নতুন বইর বান্ডিল দেখে সন্দেহ করে তখন সরকারী বই বিক্রির বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এবং এলাকা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে, এলাকার সাধারণ জনগণ ২০১৮ ও ১৯ সালের মাধ্যমিক স্তরের বিপুল পরিমান নতুন বই দেখতে পায়।
অভিযোগ উঠছে, শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে। কেনোনা ঐ অফিসার দীর্ঘদিন ধরে অধিক চাহিদা দেখিয়ে প্রতি বছরে অতিরিক্ত সরকারি বই নিয়ে পরে তা গোপনে কালো বাজরে বিক্রি করে থাকেন। এছাডাও তার বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম, দুর্নীতির অনেক অভিযোগ আগে থেকে রয়েছে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, গ্রীস্মকালীন ছুটি, রোযা ও ঈদের  কারণে অফিসবন্ধ থাকার সুযোগে শিক্ষা অফিসার বইগুলো  গোপনে সরিয়ে রাখে। মঙ্গলবার (১২ জুন) বইগুলো শ্যামনগর থেকে কালিগঞ্জের মৌতলা বাজারে  বিক্রির জন্য নিয়ে আসে।

মৌতলা বাজারের ভাংড়ির দোকানদার বিশ্বজিৎ কর্মকার দায় এড়াতে বলেন, নতুন বই দেখে আমি সন্দেহ করি এবং টেন্ডারের কাগজ আছে কিনা জিঙ্ঘাসা করি। চালান এবং টেন্ডারের কাগজ না থাকায় আমি ক্রয় করিনি। শনিবার দিতে চাইলে আমি বই ক্রয় করতে অস্বিকার করি।

স্থানীয় রুহুল আমিন বলেন, একদিকে মাননীয় প্রধান মন্ত্রি শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাধারণের দোর গোড়ায় পৌছাতে নিরালস পরিশ্রম করছেন। অন্যদিকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ( এনসিটিবি ) এর বই গুলো মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসাররা কালোবাজার অথবা ভাংড়ির দোকানে বিক্রি করে দিচ্ছেন। স্থানীয়রা তদন্ত্য সাপেক্ষে ঘটনাটির সাথে সংশ্লিষ্টদের বিচার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেছেন।

শ্যামনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আকরাম হোসেন খান, যিনি নিজেই উপস্থিত থেকে বই বিক্রি করছেন, তিনি বলেন যে, আমাদের বই রাখার জায়গা ছোট হয়ে গেছে। সেকারনে ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে বই বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০১৯ সালের বই কেন বিক্রির তালিকায় এ কথা জিঙ্ঘেস করলে তিনি বলেন, সেটা আমাদের ভুল হয়েছে।

তবে শ্যামনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা- মোঃ আকরাম হোসেন খান রাত্রি ১০টা পর্যন্ত বই বিক্রির রেজুলেশন, টেন্ডার, চালান কিম্বা কোন ডকুমেন্ট সামনে আনতে পারেনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2013 www.satkhiranews24.com
Hosted By LOCAL IT